
কাবুলের ক্ষমতা দখল করার পরেই সেখানকার প্রধান কারাগার পুল-ই-চরখির দরজা খুলে দিয়েছে তালেবানরা। সেখানে বন্দি তালেবান যোদ্ধাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেই সুযোগে কারাগারটিতে বন্দি তিন বাংলাদেশিও মুক্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা এবং তালেবানকে সহায়তার অভিযোগে ওই তিনজনসহ ৪ বাংলাদেশি বহু বছর ধরে পুল-ই-চরখিতে বন্দি ছিলেন। উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম এই বন্দিদের একজন মুক্ত ও বাকি দুজনও সম্ভবত মুক্ত হয়েছেন বলে আমাদের সময়কে নিশ্চিত করেছেন। আফগানিস্তানে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই। দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক দেখভাল করার দায়িত্ব উজবেকিস্তানের বাংলাদেশ দূতাবাসের।
এদিকে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের ৯ কর্মীর মধ্যে ৬ জন সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টরের বাসায় নিরাপদে আছেন বলে জানান রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম। এর মধ্যে তিনজন ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ফিরেছেন। বাকি ৬ জন আগামী ১৮ আগস্ট দেশের উদ্দেশে কাবুল ত্যাগ করতে পারেন।
রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের সময়কে বলেন, কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবানরা বিভিন্ন কারাগার খুলে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ৩ বাংলাদেশি বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। আফগানিস্তানের বৃহত্তম কারাগার পুল-ই-চরখিতে বন্দি ছিলেন তারা। তাদের মুক্ত করতে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নানামুখী কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছিলেন বলে জানান রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম। মুক্ত হওয়া ৩ বাংলাদেশি হলেন খুলনার দৌলতপুর উপজেলার মঈন আল মেজবাহ, রাজধানীর মিরপুরের (ভাসানটেক) কাওসার সুলতানা এবং ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার উবাইদুল্লাহ হারুন। দূতাবাসের রেকর্ড মতে, জেলে থাকা চতুর্থ বাংলাদেশি সিরাজ আবদুস সাত্তারের কোনো হদিস এখনো মেলেনি। বাংলাদেশের কোন জেলা বা উপজেলায় তার বাড়ি সে সম্পর্কেও দূতবাসের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।
এদিকে আফগানিস্তানে থাকা কোনো বাংলাদেশির এখন পর্যন্ত হাতাহত বা বিপদে পড়ার খবর পাননি দাবি করে রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের ৬ কর্মকর্তাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। তারা বর্তমানে কাবুলে ব্র্যাকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের বাসভবনে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। আমেরিকান বংশোদ্ভূত ব্র্যাকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আগেই নিরাপদে কাবুল ছেড়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান রাষ্ট্রদূত। দূতাবাসের সরবরাহ করা তথ্য মতে, ব্র্যাকের ওই ৬ কর্মকর্তা হলেন ঢাকার বাসিন্দা মো. করিম শিকদার ও মোহাম্মদ সরফরাজ, রংপুরের মো. আসাদুজ্জামান, যশোরের মো. কামাল হোসেন, ফরিদপুরের রফিকুল হক মৃধা এবং নোয়াখালীর মো. ইউসুফ হোসেন। উল্লেখ্য, এর আগে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক শামেরান আবেদকে উদ্ধৃত করে ব্র্যাক প্রচারিত বিবৃতিতে জানানো হয়, আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর দেশটিতে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ব্র্যাক তার কর্মীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিয়েছে।
পাঠকের মতামত